জহিরুল হক বাবু।।
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে আসা ঢলে কয়েকদিন ধরে উচ্চ প্রবাহে থাকা গোমতী নদীর পানি অবশেষে কমতে শুরু করেছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরছে কুমিল্লার গোমতীপাড়ের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেল ৩টায় গোমতী নদীর পানির স্তর ছিল ৮.৬৫ মিটার, যা বিপৎসীমা (১১.৩০ মিটার) থেকে ২.৬৫ মিটার নিচে। আগের রাত ১২টায় এ স্তর ছিল ৯.৩৩ মিটার। অর্থাৎ সময়ের সঙ্গে নদীর পানি ধীরে ধীরে নামছে। এর একদিন আগেও নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছিল।
ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় উজান থেকে ঢলের চাপও কমেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে পানি কমতে শুরু করায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা থেকে ইতোমধ্যে পানি সরে যেতে শুরু করেছে। তবে নগরীর কিছু নিচু এলাকায় এখনো সাময়িক জলাবদ্ধতা রয়েছে।
স্থানীয়দের কণ্ঠে আতঙ্ক ও স্বস্তির মিশ্র অনুভূতি গোমতী নদীর চরপাড়ার বাসিন্দা আবদুল মালেক (৫৫) বলেন, “তিনদিন আগেও নদীর পানি উঠেই যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল এবার আর রক্ষা নেই। এখন দেখি পানি একটু একটু করে নামছে, তাই বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে কিছুটা স্বস্তিতে আছি।”
বাঁধ সংলগ্ন এলাকার গৃহবধূ শাহিনা আক্তার (৩২) বলেন, রান্নাঘর ডুবে গেছিল। এখন পানি কমেছে, তবে ঘরে ফেরা যাচ্ছে না—সব ভিজে গেছে।”
চর এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম (৪২) বলেন, “সবজির জমি ডুবে গেছিল, অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তবে আল্লাহর রহমতে পানি নামতেছে, এখন নতুন করে আবার লাগাবো চিন্তা করতেছি।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান বলেন, “বর্তমানে নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে। যদি বৃষ্টি বন্ধ থাকে, তাহলে পরিস্থিতি খুব দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে আমরা এখনো সতর্ক অবস্থানে আছি।”
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, “বন্যা মোকাবিলায় ৫৮৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, জিআর চাল ও নগদ অর্থ মজুত রয়েছে। গোমতীর পানি কমতে থাকায় আমাদের উদ্বেগ অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।”
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page